রবিবার, ২৫ জুলাই, ২০১০

news kopil dev

"৬৩ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ায় মারা যান পুরান সিং নামের ভারতীয় এক অভিবাসী। শহরের রাস্তায় ঘোড়ার গাড়িতে করে মালামাল ফেরি করা ছিল তাঁর পেশা। মৃত্যুর আগে নিঃসন্তান পুরানের আশা ছিল হয়তো একদিন তাঁর আত্দীয়স্বজন এসে তাঁর দেহভস্ম দাবি করবে, মাতৃভূমিতে নিয়ে সৎকার করবে। তাই তিনি তাঁর দেহভস্ম একটি শবঘরে (ফিউনারাল হোম) রেখে দেওয়ার অনুরোধ করেন। অবশেষে তাঁর শেষ ইচ্ছা পূরণ হতে চলেছে ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার কপিল দেবের কল্যাণে। পুরান সিংয়ের কাহিনী শুনে তাঁর দেহভস্ম নিতে গতকাল রবিবার কপিল হাজির হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের ওয়ার্নাম্বুলে।
অস্ট্রেলিয়ার টেলিভিশন সাংবাদিক মানপ্রিত সিং জানান, কপিল পুরানের দেহভস্ম ভারতে নিয়ে গিয়ে গঙ্গায় বিসর্জন দেবেন বলে জানিয়েছেন।
ওয়ার্নাম্বুল স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকাকে কপিল বলেন, 'এটা এক বিস্ময়কর কাহিনী। জীবনে যত কাজ করেছি তা থেকে এটা একেবারেই আলাদা। বহু মানুষের হৃদয় ছুঁয়েছে পুরানের কাহিনী। এ গল্প মানুষে মানুষে সম্পর্ক তৈরি করবে আর প্রচার করবে ভালোবাসার বাণী। এটা এমনই আবেগতাড়িত এক গল্প, যার সমাপ্তি সুন্দর।'
ভারতের পাঞ্জাবের বিলগা গ্রামের পুরান ১৮৯৯ সালে গ্রাম ছাড়েন। ১৯৪৭ সালে ৭৭ বছর বয়সে তিনি মারা যান। সে সময়ে ওয়ার্নাম্বুলের গাইয়েটস ফিউনারালস হোম পুরানের মৃতদেহ মেলবোর্নের ক্রিমেটরিয়ামে (যেখানে শব পোড়ানো হয়) পাঠায়। ওই সময় রাজ্যের একমাত্র ক্রিমেটরিয়ামটি ছিল মেলবোর্নে। পরে তাঁর দেহভস্ম একটা প্লাস্টিকের সিলিন্ডারে ভরে আবার ওয়ার্নাম্বুলে পাঠানো হয়। ফিউনারাল হোম সে সময় এবং পরে ১৯৮০-এর দশকে দুবার পাঞ্জাবে পুরানের আত্দীয়স্বজনের খোঁজ করেন। কিন্তু কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে ওয়ার্নাম্বুল কবরস্থান কর্তৃপক্ষ ওই দেহভস্ম সমাধি ক্ষেত্রের দেয়ালের ফোঁকরে রেখে দেয়।
মানপ্রিত সিং জানান, তাঁর সঙ্গে অভিবাসী ভারতীয় ছাত্রদের প্রতি অস্ট্রেলীয়দের সাম্প্রতিক মনোভাব নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল কপিলের। যুক্তি-পাল্টাযুক্তির এক পর্যায়ে মানপ্রিত সিং কপিলকে শোনান অস্ট্রেলিয়ান ফিউনারাল কর্তৃপক্ষ একজন ভারতীয় হকারের শেষ ইচ্ছা পূরণের জন্য যা যা করেছে তাঁর কাহিনী। এর পরই কপিল পুরানের মৃতদেহ দেশে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। গত মাসে বিষয়টি ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে আসার পর পুরানের আত্দীয়স্বজনের খোঁজ পাওয়া যায়। তারা পাঞ্জাব ও ইংল্যান্ডে বসবাস করছেন।

- Sent using Google Toolbar"

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন