মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই, ২০১০

বহু রঙে রাঙানো বাড়ি

"লিলি ইসলামের দরজার বাইরে নকশা কাটা কালো পালতোলা বড় বজরা। পাশের সোনালি দেয়ালের পটভূমিতে সোনালি কাজ করা গোল আয়না বসানো।
দরজা খুলতেই ঘরের প্রশস্ততা প্রশান্তি এনে দেয়। প্রতি কোণে ছড়িয়ে আছে যত্নের ছাপ। বসার ঘরের দুটি জানালায় তিন স্তর পর্দার একদম উপরে দেওয়া হয়েছে অফহোয়াইট জামদানি শাড়ি। চার ডিজাইনের চারটি সোফাসেট বসার ঘরজুড়ে সাজানো। ড্রইং রুমের এক প্রান্তে কালো মার্বেল পাথরের ঘরজোড়া ডায়াস। অ্যান্টিক ডিজাইনের এক জোড়া চেয়ার, পিতলের ডিজাইন করা কাঠের চৌকি, তার ওপর পিতলের আলবোলা। একটু পেছনে দেয়াল ঘেঁষে কুকুর-মাথাওয়ালা কলের গান ডায়াসটিকে দিয়েছে নবাবী আভিজাত্য। এর বিপরীত দেয়াল যেন একটুকরো বাংলার গ্রাম। ডায়াসের এক কোণের রট আয়রনের ফুলদানিতে বিভিন্ন রঙের কৃত্রিম ফুল সাজানো। সোফার কুশন কভারগুলো শীতল পাটি দিয়ে তৈরি। দেয়ালগুলোতে শোভা পাচ্ছে নিসার হুসেন, হাশেম খান, কনক চাঁপা, শিশির ভট্টাচার্যের চিত্রকর্ম। বসার ঘরটাকে বিশিষ্টতা দিয়েছে এর ছাদজোড়া কাঠের লাইটিং প্যানেল। এক বসারঘরেই ব্যবহার করা হয়েছে চারটি রঙ। ছাদে উজ্জ্বল হলুদ, আর তিন দিকে কমলা, বাঙ্গি, অফহোয়াইট দেয়াল। এক পাশ দিয়ে উপরতলায় যাওয়ার সিঁড়ি। সিঁড়ির ধাপগুলো সাজানো হয়েছে গাছ, মোম, গাছের গুঁড়িতে তৈরি মানুষের মুখ, ব্রোঞ্জের বুদ্ধমূর্তি এবং সবার উপরে কাঠে খোদাই করা রবীন্দ্রনাথের মুখাবয়ব ভাস্কর্য। সিঁড়ির ছাদ থেকে ঝুলছে বড় আকারের শ্যান্ডলার। শ্যান্ডলারে চোখ বেয়ে উপরে তাকালে থমকে দাঁড়াতে হয়। ছাদ নয়, হেমন্তের পেঁজা তুলো ছড়ানো ঝকঝকে নীল আকাশের পটভূমিতে একটি কৃষ্ণচূড়ার ডাল চোখে পড়বে। পুরোটাই চিত্রকর্ম। সিঁড়ির নিচের ঘরটা সাজানো হয়েছে বিচিত্র সব জিনিসে। মাটির গামলায় মোম, পিতলের গোল ট্রেতে কাচের মার্বেল, আলপনা করা কাঠের পিঁড়ি, ফুল আঁকানো হারিকেন, পুতুল, হাঁস, ঘণ্টা, কচ্ছপ, টিয়া, একতারা, দোতারা_কী নেই সেখানে! পুরো অন্দরমহলে ব্যবহার করা হয়েছে কয়েক রকম উজ্জ্বল রঙ এবং দৃষ্টিনন্দন ওয়াল পেপার।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন